তিলাওয়াতের শুরুতে তা'আওউয ও তাসমিয়াহ্ বা আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়া
তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার গুরুত্ব ও ফযীলত জানুন। কেন তা'আওউয ও তাসমিয়াহ্ পাঠ জরুরি, এবং এগুলো কীভাবে কুরআন তিলাওয়াতে সঠিকভাবে পড়া হয়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
تَعَوُّدُ (তা'আওউয) অর্থ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ পড়া আর تسْمِيَةٌ (তাসমিয়াহ) অর্থ بِسْمِ اللّٰهِ পড়া।
কুরআন শারীফ তিলাওয়াত শুরু করিবার পূর্বে মুস্তাহাব নিয়ম হইতেছে- উত্তমরূপে মিসওয়াক করিয়া ওজুকরত: পাক-পবিত্রতা হাসিল করিয়া পশ্চিম দিকে মুখ করিয়া কালামে পাককে উঁচুতে রাখিয়া বসা, দুনিয়ার সকল বিষয় মন হইতে খালি করিয়া এক আল্লহ রব্বুল আ'লামীনের দিকে ফিরিয়া শুধুমাত্র তাঁহার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্জনে নিবিষ্ট মনে দরূদ শারীফ পড়িয়া তিলাওয়াত শুরু করা এবং একইভাবে দরূদ শারীফ পড়িয়া তিলাওয়াত শেষ করা। কিতাবে বিভিন্ন প্রকার দরূদ শারীফ পাওয়া যায়। তবে উত্তম দরূদ শারীফ হইতেছে দরূদে ইব্রহীমী যাহা নামাজে পড়া হয়। শুরুতে দরূদ শারীফের পর তা'আওউজ অর্থাৎ • أَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ (অর্থ- আমি বিতাড়িত শয়তান হইতে আল্লহ তা'আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি) পড়িতে হইবে। পারা সূরা নাহাল ৯৮ নং আয়াতে আল্লহ তা'আলা বলিয়াছেন,
فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ .
অর্থ: "যখন তুমি কুরআন শারীফ তিলাওয়াত করিবার ইচ্ছা কর তখন আল্লহ তাআ'লার নিকট বিতাড়িত শয়তান হইতে আশ্রয় প্রার্থনা কর।"
তিলাওয়াতের সময় মনে রাখিতে হইবে, মহাপবিত্র এই কিতাব আল্লাহ রব্বুল আ'লামীনের কালাম (কথা), কোন মানুষের লিখিত কিতাব ইহা নহে। এই কালামের আজমত (বড়ত্ব) ও ইজ্জত (সম্মান) এবং ফযীলত (গুরুত্ব) মনে স্থান দিতে হইবে। বহু নামী ও দামী মানুষ কুরআন শারীফ পড়িতে পারেন না। এই মহান কিতাব যে কেউই ইচ্ছা করিলে পড়িতে পারিবে না। আল্লহ্ তা'আলা যাহাকে পছন্দ করিবেন শুধুমাত্র তিনিই এই মহান কালাম তিলাওয়াত করিবার সৌভাগ্যের অধিকারী হইবেন। কাজেই নিরিবিলি পরিবেশে অত্যন্ত মনোযোগের সহিত তিলাওয়াত করিতে হইবে। মনে করিতে হইবে "আমি মহান আল্লহর এই মহাসম্মানিত কালাম তাঁহাকে পড়িয়া শুনাইতেছি"।
কুর'আন শারীফকে সাত طَرِيْقَةٌ বা বাচনভঙ্গিতে রসূল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লহ্ তা'লার নিকট হইতে পাঠ করিবার অনুমতিপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে শুধুমাত্র কুর-ঈশদের পঠন ভংগিতে সাতজন ক্বারী সাতভাবে তা'আওউয পাঠ করিতেন। উক্ত সাত প্রকারের তা'আওউয পাঠ পরবর্তীতে বর্ণিত হবে। তবে রসূল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বদা
اَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ পড়িতেন। তাই ইহা পড়াই উত্তম। তিলাওয়াতের মাঝখানে কথা বলিলে, সালামের জওয়াব দিলে বা অন্য যে কোন প্রকার শব্দ ব্যবহার করিলে পড়া ভংগ হইয়া যায়। এইভাবে যতবারই পড়া ভংগ হইবে, ততবারই আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ সম্পূর্ণ পড়িয়া পুনরায় তিলাওয়াত শুরু করিতে হইবে। তৎসংগে,
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (অর্থ-পরম করুণাময় দয়ালু আল্লহ তা'আলার নামে শুরু করিতেছি) পড়া উত্তম। অনেকে মনে করেন, এই অবস্থায় শুধু বিসমিল্লাহ পড়িয়া তিলাওয়াত শুরু করা যায়। ইহা ঠিক নয়। মনে রাখিতে হইবে যে, কুরআন শারীফ তিলাওয়াত ও দুনিয়ার অন্য যে কোন কথা ও কাজের মধ্যে তা'আওউজ পার্থক্য সৃষ্টি করে।
হযরত আবু আমর হাফস ইবনে সুলাইমান (রহমাতুল্লহ্ আলাইহি) এর রিওয়ায়াত মুতাবিক তিলাওয়াতকালে এক সূরা শেষ হইলে সূরা তাওবাহ্ ব্যতীত প্রতিটি সূরা আরম্ভ করার পূর্বে তাসমিয়াহ্ (সম্পূর্ণ) পড়া জরুরী। এ ক্ষেত্রে পূর্বের সূরা শেষে ওয়াক্ফ করিয়া (দম ফেলিয়া) তাসমিয়াহ্ পড়িতে হইবে। অতঃপর পরের সূরা শুরু করিতে হইবে। কুরআনুল কারীম তিলাওয়াতে তাআওউয ও তাসমিয়াহ নিম্নোক্ত তিনভাবে পড়া যায়।
তেলাওয়াতে কখন তাআওউয ও তাসমিয়াহ পড়াতে হবে
ক. পড়ার শুরু ও সূরার শুরু, এক্ষেত্রে তাআওউয ও তাসমিয়াহ উভয়টি পড়া জরুরী।
খ. পড়ার শুরু তবে সূরার মাঝখান, তাআওউয পড়া জরুরী। তবে তাসমিয়াহ্ পড়া ইখতিয়ার (ইচ্ছাধীন)।
গ. পড়ার মাঝখান তবে সূরার শুরু, তাসমিয়াহ্ পড়া জরুরী।
তবে তিলাওয়াত করিতে করিতে যদি দশম পারা সূরা বার'আত (সূরা তাওবাহ্) আসিয়া পড়ে তবে তাসমিয়াহ্ পড়িতে হয় না। একইভাবে পড়া চালাইয়া যাইতে হয়। কারণ, এই সূরা নাযিলের সময় তাসমিয়াহ্ নাযিল হয় নাই।
• بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ রহমত ও বরকতের নিদর্শন, শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক; কিন্তু সূরা তাওবাহতে আল্লহ তা'আলা কাফির ও মুশরিকদের উপর গযব ও তাহাদের কুতলের হুকুম নাজিল করিয়াছেন। আবার তাজবীদের অনেক ইমাম মনে করিয়াছেন, সূরা আংফাল ও সূরা তাওবাহ্ দুই সূরা নহে, উভয়টি একই সূরা। সেই জন্য সূরা তাওবাহ্ পূর্বে তাসমিয়াহ্ নাই। তাই ইহার শুরুতে কুরআন শারীফে তাসমিয়াহ্ লেখা হয় নাই। সূরা তাওবাহ্ ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে তাসমিয়াহ্ পড়া সুন্নাত। তবে সূরা তাওবাহ্ হইতে বা ইহার যে কোন অংশ হইতে তিলাওয়াত শুরু করিলে তা'আওউয অবশ্যই পড়িতে হইবে। এক্ষেত্রে তাসমিয়াহ্ পড়া তিলাওয়াতকারীর ইচ্ছা। স্থানভেদে নিম্নে বর্ণিত ছয় নিয়মে তিলাওয়াত শুরু করা যায় এবং এ বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমন,
(ক) প্রথম নিয়মঃ
তিলাওয়াতের শুরু যদি দশম পারার সূরা তাওবাহ্ অথবা উহার যে কোন স্থান হইতে হয়, তবে তা'আওউয দুইভাবে পড়া যায়।
১। আলাদা পড়া:
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ بَرَائَةٌ مِّنَ اللّٰهِ
২। মিলাইয়া পড়া:
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ بَرَائَةٌ مِّنَ اللّٰهِ
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
মুহাক্কিক আইম্মায়ে কিরামের মতে সূরা তাওবাহর ভিতরের যেকোন স্থান হইতে শুরু করিতে তাসমিয়াহ্ পড়া বা না পড়া তিলাওয়াতকারীর ইচ্ছাধীন। এক্ষেত্রে অন্যান্য সূরার মতই এর হুকুম।
(খ) দ্বিতীয় নিয়মঃ
সূরা তাওবাহ্ ব্যতীত অন্য যে কোন সূরার প্রথম হইতে তিলাওয়াত শুরু করিতে তা'আওউয ও তাস্মিয়াহ্ পড়ার ৪টি কায়দা আছে। যেমন, (১) ফাছলে কুল (২) ওয়াছলে কুল (৩) ফাছলে আউয়াল ওয়াছলে ছানী (৪) ওয়াছলে আউয়াল ফাছলে ছানী।
১। فَصْلِ كُلِّ (ফাছলে কূল)
فصل (ফাছল) অর্থ পৃথক করা, کُلُّ (কুল) অর্থ সকল, প্রত্যেক। ফাছলে কুল অর্থ সবগুলি পৃথক পৃথক। এ ক্ষেত্রে তা'আওউয, তাসমিয়াহ্ ও যে কোন সূরা- এই তিনটি পৃথকভাবে ওয়াক্ত করিয়া পড়াকে ফাছলে কুল বলে। যেমন,
أَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ .
এখানে গোল চিহ্নিত দুই স্থানেই দম ফেলিতে হইবে। ইহাকে ফাছলে কুল বলে।
২। وصل كُلِّ (ওয়াছলে কুল)
وصل (অছল) অর্থ মিলন, সংযোগ। এক্ষেত্রে তা'আওউয, তাস্মিয়াহ ও কোন সূরা পড়িতে গিয়া দম না ফেলিয়া একই সংগে সব কয়টিকে মিলাইয়া পড়াকে ওয়াছলে কুল বলে। উপরের ১নং উদাহরণের গোল চিহ্নিত কোন স্থানেই ওয়াক্ত করা যাইবে না। যেমন,আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীমি বিসমিল্লাহির রহমানির রহীমিল হামদু লিল্লাহি রব্বীল আ'লামীন।
০৩। فَصْلِ أَوَّلُ وَصْلِ ثَانِي )ফাছলে আউয়াল ওয়াছলে ছানী)
أَوَّلُ (আউয়াল) - অর্থ প্রথম। ثَانِي (ছানী) - অর্থ দ্বিতীয়।
তা'আওউয পড়িয়া ওয়াক্ফ করিতে হইবে। অতঃপর তাসমিয়াহ্ পড়িয়া ওয়াক্ফ না করিয়া সূরা শুরু করিতে হইবে। এই পদ্ধতিকে ফাছলে আউয়াল ওয়াছলে ছানী বলে। এক্ষেত্রে উপরের ১নং উদাহরণের গোল চিহ্নিত ১ম স্থানে দম ফেলিতে হইবে এবং ২য় গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলানো যাইবে না। মিলাইয়া পড়িতে হইবে। যেমন,
আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম। বিসমিল্লাহির রহমানির রহীমিল হামদু লিল্লাহি রব্বীল আ'লামীন।
8 । وَصْلِ أَوَّلْ فَصْلِ ثَانِي (ওয়াছলে আউয়াল ফাছলে ছানী)
তা'আওউয ও তাসমিয়াহ্ একই নিঃশ্বাসে পড়িতে হইবে। অত:পর সূরাকে আলাদাভাবে পড়িতে হইবে। এই পদ্ধতিকে ওয়াছলে আউয়াল ফাছলে ছানী বলে। এক্ষেত্রে ১নং উদাহরণের গোল চিহ্নিত প্রথম স্থানে দম ফেলানো যাইবে না। তবে ২য় গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলিয়া সূরা পড়া শুরু করিতে হইবে। যেমন,
আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীমি বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম।
আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আ'লামীন।
এই চতুর্থ কায়দাতে তিলাওয়াত করা অনুচিত।
(গ) তৃতীয় নিয়মঃ
তিলাওয়াত সূরার প্রথম হইতে নয় বরং যে কোন সূরার মধ্য হইতে শুরু হইলে তা'আওউষ ও তাস্মিয়াহ্ পড়ার ব্যাপারে দুইটি পদ্ধতি জায়িয। বাকী দুইটি নাজায়িয। নিম্নের দুইটি জায়িয পদ্ধতি। যেমন,
১। ফাছলে কুল
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطٰنِ الرَّجِيْمِ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
اَللّٰهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ ج
২। ওয়াছলে আউয়াল ফাছলে ছানী
أَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيْمِ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
اَللّٰهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ ج
উপরের গোল চিহ্নিত স্থানগুলিতে দম ফেলিতে হইবে।
বাকী দুইটি পদ্ধতি- ওয়াছলে কুল ও ফাছলে আউয়াল ওয়াছলে ছানী অনুযায়ী তিলাওয়াত করা উচিত নহে।
(ঘ) চতুর্থ নিয়মঃ
তিলাওয়াতকালে কোন একটি সূরা শেষ হওয়ার পর সূরা তাওবাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সূরা আরম্ভ করিতে তিনটি জায়িয পদ্ধতি ও একটি নাজায়িয পদ্ধতি আছে। যেমন,
১। ফাছলে কুল
যেমন, ৩০ পারা সূরা ফীল শেষ করিয়া সূরা কুরঈশ শুরু করিতে,
مَأْكُوْلٍ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِلِاِيْلٰفِ قُرَيْشٍ
২। ফাছলে আউয়াল ওয়াছলে ছানী
যেমন, ৩০ পারা সূরা ফীল শেষ করিয়া সূরা কুরীন শুরু করিতে,
مَأْكُوْلٍ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ لِاِيْلٰفِ قُرَيْشٍ
৩। ওয়াহলে কূল
যেমন, ৩০ পারা সূরা আছর শেষ করিয়া সূরা হুমাযাহ শুরু করিতে,
بِالصَّبْرِ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ وَيْلُ لِّكُلِّ
উপরের তিনটি জায়িয পদ্ধতির উদাহরণে প্রতিটি গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলিতে হইবে।
ওয়াছলে আউয়াল ফাছলে ছানী অনুযায়ী তিলাওয়াত নাজায়িয। কারণ উদাহরণ হিসাবে-৩০ পারা সূরা কাফিরুন শেষ করিয়া সূরা নছর শুরু করিতে।
وَلِيَ دِيْنِ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ اِذَا جَاۗءَ
গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলিতে হইবে। ফলে এই পদ্ধতিতে তিলাওয়াতের সময় মনে হয় যে, তাসমিয়াহ্ প্রথম সূরার অংশ হিসাবে পড়া হইয়াছে। অথচ তাসমিয়াহ শুরু মাত্র, সূরার অংশ নহে। আর সূরার শেষে তাসমিয়াহ পড়ার কোন যৌক্তিকতা নাই।
(৫) পঞ্চম নিয়মঃ
তিলাওয়াতকালে দশম পারার সূরা আংফাল শেষ হওয়ার পর সূরা তাওবাহ্ শুরু করিতে তিনটি পদ্ধতি অবলম্বন করা জায়িব। অবশ্য অন্যান্য সূরার শুরুতে যেমন তাস্মিয়াহ্ পড়িতে হয়, এক্ষেত্রে সেভাবে তাস্মিয়াহ্ পড়া যাইবে না। তাস্মিয়াহ্ পড়া নিষেধ। পদ্ধতি ৩টি:
১। وقف (ওয়াকফ):
সূরা আংফাল শেষ হইলে থামিতে হইবে। তারপর সূরা তাওবাহ্ শুরু করিতে হইবে। যেমন,
عَلِيمٌ بَرَائَةٌ مِّنَ اللّٰهِ.
গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলিতে হইবে।
২। وصل (ওয়াছল):
সূরা আংফালের শেষ অংশের সহিত সূরা তাওবাহ মিলাইয়া পড়িতে হইবে। যেমন,
عَلِيمٌ ۢبَرَائَةٌ مِّنَ اللّٰهِ
৩। سَكْتَةٌ )সাপ্তাহ):
সূরা আংফাল শেষ হইলে আওয়াজ বন্ধ রাখিয়া ও শ্বাস জারি রাখিয়া, এক শ্বাসে পুনরায় সূরা তাওবাহ্ শুরু করতে হইবে। যেমন,
عَلِيمٌ ۫ بَرَائَةٌ مِّنَ اللّٰهِ
(চ) ষষ্ঠ নিয়মঃ
সূরা তাওবাহ্ ব্যতীত তিলাওয়াত যে কোন সূরার শুরু হইতে না হইয়া বরং অন্য যে কোন স্থান হইতে হইলে এবং তাস্মিয়াহ্ না পড়িলে, দুইভাবে তা'আওউয পড়া যাইবে। যেমন,
১। فَصْلٌ (ফাছল):
যেমন, ২৩ পারা সুরা ইয়াসীন আয়াত ২২,
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ وَمَا لِيَ لَآ أَعْبُدُ
২। وَصْلٌ )ওয়াছল(:
যেমন, ২৩ পারা সুরা ইয়াসীন আয়াত ২২,
اَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ وَمَا لِيَ لَآ أَعْبُدُ
উপরের ১নং উদাহরনের গোল চিহ্নিত স্থানে দম ফেলিতে হইবে। ওয়াছল বা মিলাইয়া পড়িবার সময় সতর্কতা অবলম্বন করিতে হইবে যে, আয়াতের শুরুতে 'আল্লহ' শব্দ বা উহার কোন ছিফাত বা সর্বনামের মধ্য হইতে কোন শব্দ না আসে। যেমন,
(1) اَللّٰهُ نُوْرُ السَّمَوَاتِ
(2) اَللّٰهُ يَصْطَفِىْ
(٣) اَلرَّحْمٰنُ عَلَّمَ
(4) هُوَ اللّٰهُ الَّذِيْ
এই ধরণের আয়াতের পূর্বে তা'আওউযকে মিলাইয়া পড়া জায়িয নাই।
What's Your Reaction?