মাখরাজের বিবরণ: সঠিক উচ্চারণের সহজ গাইড
মাখরাজের বিবরণ: কুরআন শিক্ষার সঠিক উচ্চারণের নিয়মাবলী জানুন। সহজ ভাষায় মাখরাজের বিভিন্ন ধরন এবং উচ্চারণের স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত।
কুরআনের সঠিক তেলাওয়াতের জন্য মাখরাজের গুরুত্ব অপরিসীম। মাখরাজ অর্থ হলো হরফের নির্দিষ্ট উচ্চারণের স্থান বা পয়েন্ট। প্রতিটি আরবি হরফ একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে উচ্চারিত হয়, এবং সঠিকভাবে সেই স্থানগুলো জানা থাকলে কুরআন পাঠের সময় বিশুদ্ধ উচ্চারণ করা সম্ভব। এই নিবন্ধে আমরা মাখরাজের বিবরণ, এর প্রকারভেদ, এবং কিভাবে হরফগুলো উচ্চারিত হয় তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।
মাখরাজ কী এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?
মাখরাজের বিবরণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে, কুরআন তেলাওয়াতের সময় ভুল উচ্চারণ হতে পারে, যা পাঠের অর্থ পরিবর্তন করে দিতে পারে। তাই মাখরাজ শেখা এবং হরফের সঠিক উচ্চারণের স্থান বুঝে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মাখরাজের পরিচয়:
مَخْرَج (মাখরাজ) শব্দের অর্থ হলো বাহির হওয়ার স্থান, অর্থাৎ যে স্থান থেকে আরবি হরফগুলো উচ্চারিত হয়, তাকে মাখরাজ বলা হয়। কোনো হরফের সঠিক মাখরাজ নির্ধারণ করতে হলে, সেই হরফে সাকিন ব্যবহার করে তার পূর্বে যবরযুক্ত হামযাহ বসিয়ে উচ্চারণ করতে হয়। তখন বোঝা যায় যে, মুখের কোন অংশ থেকে সেই হরফ উচ্চারিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, 'ب' হরফের মাখরাজ জানতে اَبْ উচ্চারণ করলে দেখা যায়, দুই ঠোঁট একত্রিত হয়। সুতরাং, দুই ঠোঁটই 'ب' হরফের মাখরাজ।
আরবি হরফের সংখ্যা ২৯টি এবং মাখরাজের সংখ্যা ১৭টি। যদিও মাখরাজের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে, বর্তমান সময়ে ১৭টি মাখরাজই অধিকাংশের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। মোট পাঁচটি প্রধান স্থান থেকে এই হরফগুলো উচ্চারিত হয়। এই স্থানগুলো ভালোভাবে চিনে নিলে মাখরাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় এবং মনে রাখা সহজ হয়। উক্ত স্থানগুলো হলো—গলা, জিহ্বা, উভয় ঠোঁট, মুখগহ্বর, এবং নাসিকামূল।
উক্ত স্থানগুলোর মধ্যে থেকে একটি, দুইটি, বা কোনো কোনো স্থানে তিনটি হরফ উচ্চারিত হয়। নিচে চিত্রের সাহায্যে মাখরাজ বা উচ্চারণের স্থানগুলোর পরিচয় প্রদান করা হয়েছে। পাঠকের বুঝার সুবিধার্থে মাখরাজের বিবরণের নম্বর এবং চিত্রের নম্বরের সাথে মিল রেখে বর্ণনা করা হয়েছে।
মাখরাজের প্রকারভেদ
মাখরাজকে প্রধানত ৫টি ভিন্ন স্থানে ভাগ করা যায় যেখান থেকে আরবি হরফগুলো উচ্চারিত হয়। প্রতিটি স্থানের নির্দিষ্ট কয়েকটি হরফ সেখান থেকে উচ্চারিত হয়। নিচে মাখরাজের বিবরণ সহ প্রতিটি উচ্চারণ স্থানের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হলো:
১. গলার মাখরাজ (حلق)
হাল্ক অর্থ হলো গলা বা কণ্ঠনালী। কণ্ঠনালীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, এবং প্রতিটি ভাগ থেকে দুইটি করে হরফ উচ্চারিত হয়। যেহেতু এই হরফগুলো কণ্ঠনালী থেকে উচ্চারিত হয়, তাই বাংলায় এগুলোকে কণ্ঠবর্ণ বলা হয়। আরবিতে এই হরফগুলোকে حُرُوْفِ حَلْقِى (হুরূফে হাল্কী) বলা হয়। এই ৬টি হরফ হলো:
৩। আদনায়ে হাল্ক (কণ্ঠনালীর উপরের অংশ ( غ خ)
২। আওসাতে হাল্ক (কণ্ঠনালীর মধ্যস্থান (ع ح )
১। আকুছয়ে হাল্ক (কণ্ঠনালীর নিচের অংশ বা শুরু ( ءه )
এই ৬টি হার্ফ কণ্ঠনালী হইতে উচ্চারিত হয় বলিয়া ইহাদেরকে حُرُوْفِ حَلْقِى (হুরূফে হাক্বিয়্যাহ) বা حُرُوْفِ لَهْوِيَّة )হুরূফে লাহবিয়্যাহ) ও বলে।
২. জিহ্বার মাখরাজ (لسان)
লিসান অর্থ জিহ্বা। জিহ্বার বিভিন্ন অংশে (৪নং মাজ হইতে ১৩ নং মাখরাজ পর্যন্ত) মোট ১০টি মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান এবং দশটি উচ্চারণ স্থান হতে ১৮টি হাফ উচ্চারিত হয়।
৬. আওসাতে লিসান (জিহ্বার মধ্যভাগ) ج - ش - ي
৫. আকুছয়ে লিসান (জিহ্বার গোড়ার উপরের অংশ) ك
৪. আকুছয়ে লিসান (জিহ্বার নিচের গোড়ার অংশ) ق
ব্যাখ্যাঃ
v ৪ ও ৫ নং মাখরাজের ق ও ك হারফ দুইটিকে لَهَابِيَّةٌ (লাহাবিয়্যাহ) বা মর্ম (লাহাতিয়্যাহ) বলে। আল-জিহ্বাকের্ড (লাহাত) বলে। উহা হতে হারফ দুইটি উচ্চারিত হয় বলিয়া উক্ত নামে পরিচিত। ও হারফটির মাখরাজ হইতেছে আকছায়ে লিসান বা জিহ্বার একেবারে গোড়া যাহা আল- জিহ্বার সাথে মিলিত।
v ৬নং মাখরাজ হতে তিনটি হাফ ج-ش-ي উচ্চারিত হয়। তবে এই মাখরজ হইতে ৬ উচ্চারণের শর্ত হইল- এই ي হারকাত বিশিষ্ট (যবর, যের, পেশওয়ালা) হওয়া এবং লীনের হরফ হওয়া, কোনভাবেই মাদের হারফ না হওয়া।
উল্লেখ্য, ي (ইয়া) সাকিন অবস্থায় ডানে যের থাকলে তা মাদের হরফে পরিণত হয়, এবং সাকিন অবস্থায় ডানে যবর থাকলে এটি লীনের হরফে পরিণত হয়। যখন ইয়া মাদের হরফ হয়, তখন তা ১৬ নং মাখরাজের নিয়ম অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে। যেহেতু এই তিনটি হরফ মুখের সুবিস্তৃত অংশ, অর্থাৎ জিহ্বা ও তালুর মধ্যবর্তী স্থান থেকে উচ্চারিত হয়, তাই এই হরফগুলোকে حروف شجرية (হুরূফে শাজরিয়্যাহ) বলা হয়।
৭নং মাখরাজ হইতে ১৪নং মাখরাজ মোট ৮টি মাখরাজে ১৪টি হারফের সঠিক উচ্চারণের জন্য জিহ্বার সহিত দাঁতের সাহায্যও নিতে হয়। তাই বিশুদ্ধ উচ্চারণের জন্য দাঁতের ব্যবহার ও তাদের পরিচয় জানা একান্ত প্রয়োজন।
দাঁতের পরিচয়:
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের সাধারণত: ৩২টি দাঁত থাকে। ১৬টি দাঁত উপরের মাড়িতে এবং ১৬টি দাঁত নিচের মাড়িতে। উপরের দাঁতকে বলে عُلْ )উল্লল্টয়া) এবং নিচের দাঁতকে বলে سُفْلَیٰ )সুল্লা)। দাঁতগুলিকে নিম্নোক্তভাবে নামকরণ করা হইয়াছে এবং চিত্রে উহাদের অবস্থান দেখানো হইয়াছে।
ক. ثَنَايًا (ছানায়া)
খ. رَبَّاعِيَّات (রবাঈয়াত)
গ. أَنْيَاب (আনইয়াব)
ঘ. ضَوَاحِك (দ্বওয়াহিক)
ঙ. طَوَاحِن (ত্বওয়াহিন)
চ. نَوَاجِذْ (নাওয়াজিয)
ক. ثَنَايًا (ছানায়া):
জিহ্বার আগা বরাবর সামনের উপরের ও নিচের ২টি করে ৪টি দাঁতকে ছানায়া বলে। উপরের দুইটিকে ثَنَابًا عُلْيًا (ছানায়া উলিয়া) ও নিচের দুইটিকে ثَنَابًا سُفْلَیٰ (ছানায়া সুল্লা) বলে। এই ৪টি ছানায়া দাঁতকে কেন্দ্র করে অন্য দাঁতগুলিকে চিনিতে হয়।
খ. رَبَّاعِيَّات (রবাঈয়াত)
ছানায়া দাঁতের উপরে ও নিচের চারিপার্শ্বের ৪টি দাঁতকে رَبَّاعِيَّات বলে। ইহাদিগকে قَوَاطِعْ )কর্তন দাঁত)ও বলে। উপরের দুইটিকে رَبَّاعِيَّاتِ عُلْيَا (রবাইয়াত উলিয়া) ও নিচের দুইটিকে زناعِيَّات سُفلیٰ (রবাইয়াত সুফলা) বলে।
গ. أَنْيَاب (আনইয়াব)
রবাইয়াত দাঁতের উপরে ও নিচের চারিপার্শ্বের ৪টি দাঁতকে أَنْيَابْ (আনইয়াব) বলে। ইহাকে کَوَاسِر (সুচালো দাঁত)ও বলে। উপরের দুইটিকে أَنْيَابْ عُلْیَا (আনইয়াব উলিয়া) ও নিচের দুইটিকে آنْيَابْ سُفْلٰی (আনইয়াব সুফলা) বলে। মোট এই ১২টি দাঁত ছাড়া বাকী ২০টি দাঁতকে একত্রে أَضْرَاس )আদ্বরস) বা মাড়ি দাঁত বলে। এদেরকে চোয়ালের দাঁতও বলা হয়। উপরে আনইয়াব দাঁতের ডানে ৫টি ও বামে ৫টি মোট ১০টি দাঁতকে أَصْرَاس عُلْيَا )আদ্বরস উলিয়া) এবং নিচের আনইয়াব দাঁতের ডাইনে ৫টি ও বামে ৫টি মোট ১০টি দাঁতকে أَصْرَاس سُفْلَیٰ (আদ্বরস সুফলা) বলে। ২০টি আদ্বরস দাঁতকে তিন নামে চেনা যায়।
ঘ. ضَوَاحِك (দ্বওয়াহিক) :
আনইয়াব দাঁতের উপরে ও নিচের চারিপার্শ্বের মোটা ৪টি দাঁতকে ضَوَاحِك (হাসির দাঁত) বলে। উপরের দুইটিকে ضَوَاحِكَ عُلْيَا (দ্বওয়াহিক উলিয়া) এবং নিচের দুইটিকে صَوَاحِكَ سُقْفلیٰ (দ্বওয়াহিক সুফলা) বলে।
ঙ. طَوَاحِن (ত্বওয়াহিন):
দ্বওয়াহিক দাঁতের উপরে ও নিচের চারিপার্শ্বের ৩টি করে মোট ১২টি মোটা দাঁতকে طَوَاحِن ( পেষণ দন্ত ) বলে। উপরের ৬টি দাঁতকে طَوَاحِن عُلْيَا (ত্বওয়াহিন উইয়া) ও নিচের দাঁতকে طَوَاحِن سُفْلَیٰ (ত্বওয়াহিন সুফলা) বলে।
চ. نَوَاجِذْ (নাওয়াজিয)
ত্বওয়াহিন দাঁতের উপরে ও নিচের চারিপার্শ্বের সর্বশেষ ৪টি মোটা দাঁতকে نَوَاجِذْ বলে। এইগুলিও পেষণ দন্ত। এই চারটি দাঁতকে আমরা আক্কেল দাঁত (صِرْسُ الْعَقْلِ) বলি। কোন কোন ব্যক্তির নিচের এই দুই দাঁত থাকে না।
দাঁতগুলির আরবী বচন (عدد) নিম্নরূপঃ
একবচন |
বহুবচন |
ثَنِيَّة |
ثَنَايَا |
رَبَاعِيَّة |
رَبَاعِيَّات |
نَاب |
اَنْيَاب |
ضِرْس |
أَضْرَاسْ |
ضَاحِكَ |
ضَوَاحِكَ |
طَاحِنْ |
طَوَاحِن |
نَاجِذْ |
نَوَاجِذْ |
৭. হাফ্ফায়ে লিসান (জিহ্বার পার্শ্ব) |
ض |
৮. ত্বরফে লিসান (জিহ্বার আগার কিনারা) |
ل |
৯. ত্বরফে লিসান (জিহ্বার আগা) |
ن |
১০. ত্বরফে লিসান (জিহ্বার আগা) |
ر |
১১. ত্বরফে লিসান |
ط دت |
১২. ত্বরফে লিসান |
ظ ذت |
১৩. ত্বরফে লিসান |
ص س ز |
ব্যাখ্যাঃ
৭নং মাখরাজের হরফের উচ্চারণের ক্ষেত্রে জিহ্বার ডান বা বাম পাশের আদ্বরস দাঁত, অর্থাৎ নাওয়াজিয দাঁতের মাড়ি থেকে শুরু করে দ্বওয়াহিক দাঁতের মাড়ি পর্যন্ত জিহ্বার মিলন গতি থাকতে হবে। যদিও ض হরফটি ডান বা বাম দুই পাশ দিয়েই উচ্চারণ করা যায়, তবে বাম পাশ দিয়ে উচ্চারণ করা তুলনামূলক সহজ। ডান পাশ দিয়ে উচ্চারণ করা কঠিন। حَافَّةٌ (হাফফাহ) শব্দের অর্থ হলো পার্শ্ব বা কিনারা। ض হরফের উচ্চারণ খুব সহজ নয় এবং বাংলায় এটি সঠিকভাবে লেখাও যায় না। তাই অভিজ্ঞ উস্তাদের কাছ থেকে এটি ভালোভাবে শেখা অত্যন্ত জরুরি।
৮নং মাখরাজের লাম (ل) হরফটি জিহ্বার আগার ডান বা বাম যে কোনো পাশ থেকে উচ্চারিত হতে পারে, তবে ডান পাশ দিয়ে উচ্চারণ করা তুলনামূলক সহজ। طَرَفَ (ত্বরফ) অর্থ হলো পার্শ্ব বা কিনারা।
৯, এবং ১০নং মাখরাজের লাম (ل), নূন (ن), এবং রা (ر) এই তিনটি হরফ জিহ্বার কিনারা থেকে উচ্চারিত হয়, এজন্য এদেরকে حُرُوْف طَرَفِيَّة (হুরুফে ত্বরফিয়্যাহ) বা حُرُوْف ذَلْقِيَّة (হুরুফে যালক্বিয়্যাহ) বলা হয়। ذَلْقُ শব্দের অর্থ হলো পার্শ্ব বা কিনারা।
১১নং মাখরাজের ত্বা (ط), দাল (د), এবং তা (ت) এই তিনটি হরফ মুখের তালুর সম্মুখভাগ থেকে উচ্চারিত হয়। এজন্য এদেরকে حُرُوْف نِطْعِيَّة (হুরুফে নিতইয়্যাহ) বা তালব্য বর্ণ বলা হয়। نِطْع অর্থ হলো মুখের তালুর সামনের অংশ।
১২নং মাখরাজের ظ ذ ث এই তিনটি হরফ সামনের দাঁতের মাড়ির সহিত সামান্য সম্পর্ক থাকার কারণে এদেরকে حُرُوْف لِثَوِيَّة (হুরুফে লিছাওয়িয়্যাহ) বলা হয়। لِثَةٌ শব্দের অর্থ দাঁতের মাড়ি।
১৩নং মাখরাজের সাদ (ص), সীন (س), এবং যা (ز) এই তিনটি হরফ উচ্চারণের সময় ছানায়া উলিয়া দাঁতের আগার সহিত জিহ্বা সামান্য স্পর্শ করে এবং ছানায়া উলিয়া ও ছানায়া সুফলা দাঁতের মাঝখান থেকে উচ্চারিত হয়। এই তিনটি হরফ উচ্চারণের সময় চড়ুই পাখির আওয়াজের মতো তীক্ষ্ণ ও বাঁশির শিস দেওয়ার শব্দ হয়। এজন্য এদেরকে حُرُوْف صَفِيْرِيَّة (হুরুফে ছফীরিয়্যাহ) বলা হয়। এদেরকে জিহ্বার কিনারা ও আগা থেকে উচ্চারিত হবার কারণে এদের আরেকটি নাম হলো حُرُوْف اَسَلِيَّة (হুরুফে আসালিয়্যাহ)। صَفِيْرٌ অর্থ শিস্ দেওয়া এবং اَسَلَة অর্থ জিহ্বার আগা।
৩. ঠোঁটের মাখরাজ (شفاه)
شَفَتَيْنِ ) উভয় ঠোঁট) হইতে দুইটি মাখরাজের চারটি হারফ উচ্চারিত হয়।
১৪নং মাখরাজের এ হারফটি নিচের ঠোঁটের বা شَفَة سُفْلیٰ (শাফায়ে সুফলার) পেট বা ভেজা অংশ ও সামনের উপরের দুই দাঁতের আগা হতে উচ্চারিত হয়।
১৫নং মাখরাজের ب – م - و এই তিনটি হারফের মধ্যে وহারফটি এই মাখরাজের হারকাতবিশিষ্ট ও লীনের হারফ হবে, কোনভাবেই মাদের হারফে হবে না।
উল্লেখ্য, ওয়াও সাকিন ডানে পেশ হলে মাদের হারফ এবং ওয়াও সাকিন ডানে যবর হলে লীনের হারফ হয়। ওয়াও মাদের হারফ হলে ১৬ নং মাখরাজের নিয়মে উচ্চারণ করতে হবে ।
মুখ স্বাভাবিকভাবে বন্ধ করলে ঠোঁটের যে অংশটি বাইরে থাকে, তাকে শুকনা অংশ বলা হয়, আর যে অংশটি ভিতরে থাকে, তাকে ভিজা অংশ বলা হয়।
ب- م - و এই তিনটি হারুফ আদায়ে সামান্য পার্থক্য আছে। যেমন,
· ب দুই ঠোঁটের ভিজা অংশ হতে উচ্চারণ করতে হয় বলে ইহাকে حُرُف بَحْرِيّ )হারফে বাহরী) বলে। بَحْرِيّ (বাহরুন) অর্থ সমুদ্র।
· م ঠোঁটের শুকনা অংশ হতে উচ্চারণ করতে হয় বলে ইহাকে حَرْف بَرِّيّ (হারফে বারী) বলে।بَرّ (বাররুন) অর্থ স্থল।
· · و দুই ঠোঁটকে গোল করে উহার মাঝখানের শুকনা জায়গা হতে উচ্চারণ করিতে হয়।
ب - م - و- ف এই চারিটি হারফ ঠোঁট হতে উচ্চারিত হয় বলে এগুলিকে حُرُوْف شَفَوِيَّة (হুরূফে শাফাবিয়্যাহ) বা ওষ্ঠ্যবর্ণ বলে।
~~~~~~~~
What's Your Reaction?