صفات عارضة (ছিফাতে আরেযা)

ছিফাতে আরেযার সংজ্ঞা

صِفَاتِ عَارِضَةً صِفَاتِ عَارِضِيَّةُ : যে ছিফাত আদায় না করলেও মাখরাজ আদায় হয়ে যায়। হরফের উচ্চারণে পরিবর্তন আসে না; কিন্তু সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

উদাহরণ: ‍ر এর উপর পেশ অথবা যবর হলে সেটাকে মোটা করে (পুর) পড়া উচিত। কিন্তু কেউ যদি তা বারীক পড়ে, তবে মাখরাজ আদায় হলেও উচ্চারণের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

এই ছিফাতটিকে আরও বলা হয়:

• মুহাসিনাহ (مُحَسَنَةً)

• মুঝাইয়্যিনাহ (مُزَيِّنَةً)

• মুহাল্লয়াহ (مُحَلِّيَةً)

ছিফাতে আরেযা নামকরণের কারণ

• عَارِضَةْ : হরফে সর্বদা পাওয়া যায় না, বরং কিছু বিশেষ অবস্থায় পাওয়া যায়।

• مُحَسِّنَةُ : হরফের লাবণ্য ও সৌন্দর্য বাড়ায়।

• مُزَيِّنَةُ : হরফকে সজ্জিত করে।

• مُحَلِّيَةْ : হরফকে অলংকারে সুশোভিত করে।

ছিফাতে আরেযার সংখ্যা

ছিফাতে আরেযা সর্বদা নয়, বরং বিশেষ অবস্থায় পাওয়া যায়। এগুলো মোট ৮টি। যথা:

1. تَفْخِيْم (মোটা হওয়া)

2. تَرْقِیْقْ (চিকন/নরম হওয়া)

3. مَدّ

4. غُنَّةً

5. إِظْهَارُ

6. اقْلَابُ

7. إِخْفَاء

8. ادْغَامُ

ছিফাতে আরেযার হরফসমূহ

মোট ৮টি হরফে ছিফাতে আরেযা পাওয়া যায়:
ا ل ر ن م و ء ى

উদ্দেশ্য: এসব ক্বাওয়ায়িদ আদায় না হলে হরফের সৌন্দর্য অবশিষ্ট থাকে না এবং তা তাজবীদের কায়দার খেলাফ হয়।

তাজবীদ ও তারতীলের সম্পর্ক

তাজবীদের সংজ্ঞা:
প্রতিটি হরফকে তার সুনির্দিষ্ট মাখরাজ হতে সমস্ত ছিফাত (ছিফাতে লাযেমাহ্ ও আরেযাহ) সহকারে অকৃত্রিমভাবে সহজে আদায় করার নাম তাজবীদ।

তাজবীদ = تَجْوِيْدُ الْحُرُوْفِ
যা তারতীলের একটি অংশ।

তারতীল =

• تَجْوِيْدُ الْحُرُوفِ (হরফ শুদ্ধভাবে আদায়)

• مَعْرِفَةُ الْوُقُوْفِ (বিরতির পরিচয়)

হযরত আলী (রাযি.) বলেছেন:
التَّرْتِيْلُ هُوَ تَجْوِيْدُ الْحُرُوفِ وَمَعْرِفَةُ الْوُقُوْفِ

বি: দ্র:  কুরআনে বিশুদ্ধ তিলাওয়াতের বিষয়ে শুধু تَرْتِيل শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।

মাখরাজ বা ছিফাতে শরীক অক্ষর পার্থক্য

করার উপায়

همزة ও هاء

• উভয়ই মাখরাজে শরীক।

• ছিফাত: ইনফিতাহ, ইসতিফাল, ইছমাতে শরীক।

• همزة = যাহর + শিদ্দাহ

• هاء = হামস + রিখওয়াহ

عین ও حاء

• মাখরাজে ও কিছু ছিফাতে শরীক।

• পার্থক্য: حاء = হামস ও রিখওয়াহ, আর عين = যাহর + তাওয়াসুত।

جيم ও دال

• সমস্ত ছিফাতে শরীক, মাখরাজে ভিন্ন।

ضاد ও ظا

• পাঁচটি ছিফাতে শরীক, মাখরাজে ভিন্ন।

• ضاد = ইসতিতালত বিশেষ ছিফাত।

বি: দ্র:  ইমাম ইবনুল জাযারী (রহ.) বলেছেন:
ضاد কে ছিফাতে ইসতেত্বালত ও মাখরাজ দ্বারা ظا থেকে ভিন্ন কর।

হরফ উচ্চারণের সময়ের পরিমাপ

হরকতবিশিষ্ট হরফ

• ফাত্হা, যুম্মা, কাসরা — সবগুলো উচ্চারণে সমান সময় হওয়া উচিত।

• উদাহরণ: كتب

ভুল উচ্চারণ

1. التَّمْطِيطُ / الْإِدْخَالُ = হারাকাত দীর্ঘ করা।

   • فَمَنْ يَّعْمَلُ → ভুল: فَمَانْ يَّعْمَلْ

   • كُنتُمْ → ভুল: كُوْنْتُمْ

   • إِنَّ الَّذِينَ → ভুল: اِيْنَّ الَّذِيْنَ

2. الْإِخْتِلَاسُ = হরকত খাঁটো করা।

   • উদাহরণ: يَعِدُكُم, يَأْمُرُكُمْ, خَلَقَكُمْ

সাকিন হরফ

• আওয়ায জারি থাকার উপর নির্ভর করে দৈর্ঘ নির্ধারণ হয়।

• উদাহরণ: يَسْتَبْشِرُونَ

স্তরসমূহ

1. الشَّدِيدَةُ : রিখওয়া থেকে দীর্ঘ।

2. البَيْنِيَّةُ : রিখওয়া থেকে খাটো, শিদ্দাহ থেকে দীর্ঘ।

3. الرِّخْوَة : শিদ্দাহ থেকে খাটো।

বি: দ্র:  সাকিন হরফের সময়কাল তিলাওয়াতের গতি ও স্তর অনুযায়ী ভিন্ন হবে।